২০ নভেম্বর সালমান শাহ হত্যা মামলার প্রতিবেদন

305
সংগৃহীত।

বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যু রহস্য উদঘাটনের জন্য পিবিআইয়ের পুনঃতদন্তের প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ আগামী ২০ নভেম্বর ধার্য করেছেন আদালত।

আজ সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ধার্য ছিল। কিন্তু পিবিআইয়ের পক্ষ থেকে এদিন কোনো প্রতিবেদন দাখিল না করায় ঢাকা মহানগর হাকিম মাহমুদা আক্তার নতুন করে এদিন ধার্য করেন।

প্রয়াত চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলা পুনঃতদন্ত করতে গেল ৭ ডিসেম্বর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেন আদালত। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার ছিল তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন।

এই মামলায় সালমান শাহর পরিবারের আইনজীবী ফারুক আহম্মদ এক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আজ আমরা অপেক্ষায় ছিলাম পিবিআই সালমান হত্যার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে। কিন্তু সেটি দাখিল না হওয়ায় নতুন করে দিন ধার্য করা হয়েছে ২০ নভেম্বর। আশা করছি নির্দিষ্ট তারিখে এ তদন্ত প্রতিবেদন হাতে আসবে এবং জনপ্রিয় নায়ক সালমান হত্যার রহস্য উদঘাটিত হবে। সেই সঙ্গে এ খুনের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে সালমানের পরিবার ও তার ভ্ক্তদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হবে।’

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন ওরফে সালমান শাহ। ওই সময় এ বিষয়ে অপমৃত্যুর মামলা করেন তার বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। পরে ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত করার আবেদন জানান তিনি।

অপমৃত্যুর মামলার সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগের বিষয়টি একসঙ্গে তদন্ত করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন আদালত। সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনাটি তদন্ত করে ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় সিআইডি।

সালমান শাহর মৃত্যুকে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়। ২৫ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে ওই চূড়ান্ত প্রতিবেদন গৃহীত হয়। সিআইডির প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে তার বাবা কমর উদ্দিন আহমদ চৌধুরী রিভিশন মামলা করেন। ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠান আদালত। এরপর প্রায় ১২ বছর মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে ছিল।

মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট ঢাকার সিএমএম আদালতের বিচারক বিকাশ কুমার সাহার কাছে বিচার বিভাগীয় তদন্তের প্রতিবেদন দাখিল করেন। এ প্রতিবেদনে সালমান শাহর মৃত্যুকে অপমৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

সালমান শাহর মা নীলুফার চৌধুরী ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর ছেলের মৃত্যুতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেন এবং বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দেবেন বলে আবেদন করেন।

নীলুফার চৌধুরী ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর হাকিম জাহাঙ্গীর হোসেনের আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের নারাজির আবেদন দাখিল করেন। নারাজি আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ ১১ জন তার ছেলে সালমান শাহর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন। আদালত নারাজি আবেদনটি মঞ্জুর করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র‌্যাব) তদন্তভার প্রদান করেন।

রাষ্ট্রপক্ষ গত বছরের ১৯ এপ্রিল মামলাটিতে র‌্যাবকে তদন্ত দেয়ার আদেশের বিরুদ্ধে মহানগর দায়রা জজ আদালতে একটি রিভিশন মামলা করেন। ২০১৬ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ-৬ এর বিচারক ইমরুল কায়েস রাষ্ট্রপক্ষের রিভিশনটি মঞ্জুর করেন এবং র‌্যাব মামলাটি আর তদন্ত করতে পারবে না বলে আদেশ দেন। সর্বশেষ, সালমান শাহ হত্যা মামলার পুনঃতদন্তের প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ২০ নভেম্বর ঘোষনা করা হয়।