কে এই বিশ্বসুন্দরী মানুষী চিল্লার ?

332

বিশ্বের ১০৮টি দেশের প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে ‘মিস ওয়ার্ল্ড ২০১৭’ খেতাব জিতেছেন ২০ বছর বয়সী তরুণী মানুষী চিল্লার। ১৯৯৭ সালের ১৪ মে হরিয়ানায় এক চিকিত্‍সক পরিবারে জন্ম মিস ওয়ার্ল্ড মানুসী চিল্লারের । বাবা-মা দু’জনেই চিকিত্‍সক। বাবা মিত্র বসু চিল্লার ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের এক বিজ্ঞানী।

বাবা-মায়ের সাথে মানুষী চিল্লার

আর মা নীলম ছিল্লর ইনস্টিটিউট অব হিউম্যান বিহেভিয়র অ্যান্ড অ্যালাইড সায়েন্সের সহকারী অধ্যাপক। বাবা-মাকে দেখে ছোট থেকেই তার ইচ্ছা ছিল বড় হয়ে চিকিত্‍সক হবেন। তখন থেকেই পড়ার বইয়ে মুখ গুজে থাকতেন এই মেয়ে। আর বাকি পাঁচটা মেয়ের মতো পড়াশোনাটাই ছিল তার ধ্যান-জ্ঞান।

ডাক্তার যখন বিশ্বসুন্দরী

পরে গোটা পরিবার হরিয়ানা থেকে চলে আসেন উত্তর দিল্লিতে। মানুসী ভর্তি হন দিল্লির সেন্ট থমাস স্কুলে। দ্বাদশ শ্রেণিতে খুব ভাল ফলাফল করে সোনিপাতের ভগতফুল সিংহ সরকারি কলেজ ও হাসপাতালে(মহিলা) ডাক্তারি নিয়ে ভর্তি হন।

নাচেও পারদর্শী মানুষী

পড়াশোনার পাশাপাশি বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী রাজা রেড্ডি, রাধা রেড্ডি এবং কৌশল্যা রেড্ডির কাছে তার তালিম চলছিল কুচিপুড়ী নৃত্যশৈলীরও। এমনকি ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামার ছাত্রী এই বাদামি চোখের সুন্দরী । পড়াশোনা, পরিবার, বন্ধুবান্ধব, নাচ আর নাটক এই নিয়ে জীবনটা একই খাতে বইছিল মানুষীর।

তবে সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় এক বার অংশ নেওয়ার একটা সুপ্ত বাসনা ছিল মনের কোণায়। সে কথাটা মা-বাবাকে একদিন বলেও ফেলেন। মেয়েকে উত্‍সাহ দিতে কোনও কসুর করেননি তারা। সে সময় চণ্ডীগঢ়ে ছিলেন ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি উচ্চতার মানুসী। তিনি একটি সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হওয়ার খবর পান। আর দেরি করেননি। নাম নথিভুক্ত করে ফেলেন সেই প্রতিযোগিতায়।

কঠিন অধ্যবসায়ী মানুষী চিল্লার

সেই শুরু জীবনটাকে এক্কেবারে অন্য ভাবে দেখা। সেই থেকে বিশ্বের সেরা সুন্দরীর মঞ্চে সেরার তকমা আদায় করার জন্য শুরু কঠিন অধ্যাবসায়। যে সময় আর পাঁচটা ছাত্রী ঘুমতে যেতেন, সে সময় কঠিন ওয়ার্কআউটে ব্যস্ত থাকতেন ভারতের নতুন বিশ্ব সুন্দরী। একটা বছর ঠিকমতো পড়াশোনাটাও করে উঠতে পারেননি সে জন্য।

মানসী চিল্লার এর স্বপ্ন একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা যেখানে তিনি নারীদের ‘ঋতুস্রাব সচেতনা’ নিয়ে কাজ করবেন। তার ভাষায়, ‘আমার লক্ষ প্রথম অবস্থায় ৫ হাজার নারীকে এখানকে ঋতুস্রাবজনিত রোগের সেবা দেওয়া। কারণ ভারতে বহু নারী এ কারণে নানা রোগে আক্রান্ত হন। কিন্তু ডাক্তারের কাছে যান না বা সঠিক চিকিৎসা পান না, যার কারণে তাদের মৃত্যু পর্যন্ত হয়।’

তার এত স্বপ্ন আর পরিশ্রম অবশ্য বৃথা যায়নি। বিজয়িনীর শেষ হাসিটা হেসেছেন তিনিই। ২০১৭ সালের ২৫ জুন হরিয়ানার হয়ে প্রতিনিধিত্ব করে জিতে নিয়েছিলেন ‘মিস ইন্ডিয়ার’ খেতাব। এ বার বিশ্ব সুন্দরী ২০১৭-র মুকুট জিতে নিয়ে ভারতের দীর্ঘ ১৭ বছরের খরা কাটালেন মানুসী।