বাংলাদেশের চলচ্চিত্র নির্মাতা জি সরকার ভিষন ক্ষিপ্ত হয়েছেন এক চলচ্চিত্র অভিনেতার উপর। অনেক রাগ ও কষ্ট নিয়েই এক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘চলচ্চিত্র বানানোর ইচ্ছা বা মানসিক শক্তি দিন দিন হারিয়ে ফেলেছি। দিন দিন বললে ভুল হবে; একদমই হারিয়ে ফেলছি। কারণ যাদেরকে নিয়ে একটি চলচ্চিত্র বানাবো তারা মানুষের মধ্যে পড়ে না। একজন পেশাদার মানুষ যদি দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর একটি ছবিকে শিডিউল দিচ্ছি-দিবো করে ঘোরাতে থাকেন তাহলে চলচ্চিত্র হবে কি করে? মাঝে মাঝে মনে হয় আগের জনমে বিশাল কোনো পাপ করেছিলাম। যার জন্য এমন হচ্ছে। একজন মানুষকে কতোদিন ঘোরানো যায়? আমাদের চলচ্চিত্রের দুরাবস্থা একটি মাত্র মানুষের জন্য হয়েছে। রাজনীতি করে করে ইন্ড্রাষ্ট্রির বারোটা বাজিয়ে ফেলেছে। তারপরও হুশ হচ্ছে না।’
ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়ক শাকিব খানকে উদ্দেশ্য করেই জি সরকার কথাগুলো বলেছেন। ধারনা করা যাচ্ছে তার নির্মাণাধীন ছবির ‘লাভ ২০১৬’-এর নায়ক অর্থাৎ ঢাকাই ছবির কিং খান শাকিব খানের উপরই চটেছেন এই নির্মাতা। ২০১৩ সালে জি সরকারের পরিচালনায় শুরু হয়েছিল ‘লাভ ২০১৬’-এর শুটিং। ছবিটিতে অভিনয় করেছিলেন ঢাকাই ছবির জনপ্রিয় জুটি শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস। চার বছর পার হলেও আজও এই ছবির শুটিং শেষ করতে পারেননি নির্মাতা। কারণ হিসেবে দোষারোপ করেন ছবিটির নায়ক শাকিব খানকে। জি সরকারের মতে শাকিব যদি ঠিক মতো ‘লাভ ২০১৬’-এ শিডিউল দিতেন তাহলে ছবিটি ২০১৩ সালেই হলের মুখ দেখতে পেত।
শাকিব খানের শিডিউল নিয়ে তাল-বাহানা প্রসঙ্গে জি সরকার বলেন, ‘একদিকে শাকিব শিডিউল নিয়ে তালবাহানা করেন। এরপর আবার তার বউ অর্থাৎ অপু বিশ্বাস মাঝে মা হতে গিয়ে এক বছরের বেশি সময় নিরুদ্দেশ ছিলেন। কিন্তু অপু তার কথা মতো শিডিউল দিলেও শাকিবের জন্য এখনো ছবিটির কাজ শেষ করতে পারছি না। অল্প কিছু কাজ বাকি ছবিটির। তারপরও আজ এ বাহানা কাল সে বাহানা করে শিডিউল দিচ্ছেন না শাকিব। অথচ অন্য সব ছবি ঠিকই করতে পারছেন। শিডিউল চাইতে গেলেই বলে আরো দু’একদিন দেরি করতে।’
ছবিটির কাজ শেষ করা নিয়ে এত বছরের দেরির জন্য জি সরকার আক্ষেপ করে বলেন, ‘প্রথমে ছবিটির নাম দিয়েছিলাম ‘লাভ ২০১৩’ এরপর বছর যায় আর ছবি নামের শেষে সালের নামনটা পরিবর্তন হয়। তারপরও ছবির কাজ শেষ হয়না। এই যদি হয় একজন পেশাদারের কাজ তাহলে অন্যসব মানুষ কি করবে বলেন? একজন প্রযোজকই বা কিভাবে তার এতোগুলো টাকা আটকে রাখবে? হাতে ধরে প্রযোজকদেরকে ভিখারী বানাচ্ছেন শাকিব। এই জন্যই প্রফেশনাল প্রযোজকেরা আজ চলচ্চিত্র থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। আর যেসব নতুন নতুন প্রযোজক ব্যবসা করতে আসছেন তাদেরকেও গলায় পাড়া দিয়ে জবাই করছেন। একজন ব্যক্তির জন্য আজ চলচ্চিত্র ধ্বংস’।
এত বছর ধরে একটি সিনেমার কাজ ঝুলে থাকা মানে প্রযোজকের টাকা আটকে থাকা। শেষ পর্যন্ত কবে সেই সিনেমাটির কাজ শেষ করতে পারবেন সেটা এখনো অজানা।