বলিউড মানেই সেখানে গ্লামার, পরিচিতি ও অর্থবিত্তের ছড়াছড়ি। শত শত কোটি টাকার বিনিয়োগ আর মুনাফা হয় সেখানে প্রতিনিয়ত, যার বিরাট একটি অংশ পেয়ে থাকেন তারকারা।
তাদের কি আবার টাকা-পয়সার অভাব হতে পারে? শুনতে অবাক লাগলেও কথাটি সত্য। বলিউডের বেশ কয়েকজন বড় তারকারা দেনার দায়ে এমনই দশা হয়েছিল যে ব্যাংক তাদের দেউলিয়া পর্যন্ত ঘোষণা করেছিল! তাও আবার দেশ জুড়ে তখন তাদের জনপ্রিয়তাও ছিল। এদের কেউ কেউ অবশ্য সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছেন। এমনই কিছু তারকার কথা তুলে ধরা হল-
১. প্রীতি জিনতা : বলিউডের সদা লাস্যময়ী গ্লামার গার্ল প্রীতি জিনতা। ফিল্মি ক্যারিয়ার ছাড়ার পর নিজের ক্রিকেট দল নিয়েই ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন প্রীতি জিনতা। সেটি নিয়েই যদি থাকতেন, তাহলেই বুঝি ভালো করতেন! প্রীতি নিজের প্রোডাকশন হাউস থেকে ‘ইশক ইন প্যারিস’ নির্মাণ করে ভয়াবহভাবে ব্যর্থ হন প্রীতি। ব্যাংকের দেনায় পড়ে যান। ছবির চিত্রনাট্য নির্মাতা আব্বাস টায়ারওয়ালাও প্রীতির বিরুদ্ধে নালিশ ঠুকবার হুমকি দেন। সালমান খানের সহায়তায় এই বিপদ থেকে রক্ষা পান প্রীতি।
২. জ্যাকি শ্রফ : সিনেমার কাজ ছাড়তে না ছাড়তেই অর্থনৈতিক টানাপড়েন ঘিরে ধরে জ্যাকিকে। নিজের প্রোডাকশন হাউস সমানে লোকসানে ডুবে যাচ্ছিল। ২০০৮ সালের দিকে তাঁর অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে প্রযোজক ও পরিচালক সাজিদ নাদিয়াদওয়ালার থেকে বেশ বড় অঙ্কের টাকা ধার করেন। কিন্তু সেটি শোধও করতে পারছিলেন না। বলিউডের ‘ভাইজান’ খ্যাত সালমান খান এসে উদ্ধার করেন জ্যাকিকে। আর সালমানের কারণে সাজিদও বিশেষ কোনো অভিযোগ আনেননি জ্যাকির বিরুদ্ধে। বর্তমানে জ্যাকি শ্রফের ছেলে টাইগার শ্রফও বলিউডে অভিনয় করছে।
৩. অনুপম খের : বলিউডের এই প্রতাপশালী অভিনেতা নিজেই স্বীকার করেছেন তাঁর একসময়কার দুরবস্থার কথা। টাকা-পয়সা সব খুইয়ে ফেলার কারণেই নাকি তিনি নিজের বিখ্যাত অভিনয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘দি অ্যাক্টর প্রিপেয়ারস’ চালু করেন মাত্র ১২ শিক্ষার্থীকে নিয়ে। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানটি দেশের সেরা অভিনয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর একটিতে পরিনত হয়েছে। সেখানে এখন অভিনয় শেখার জন্য রয়েছে অজস্র শিক্ষার্থী।
৪. অমিতাভ বচ্চন : তাকে বলা হয় বলিউডের ‘জীবন্ত কিংবদন্তী’। কেবল সিংহাসন হারিয়েছিলেন তা নয়, নিজের স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান দেনার দায়ে যখন দেউলিয়া ঘোষিত হয়, অমিতাভের একেবারেই সর্বস্বান্ত অবস্থা হয়েছিল। এতটাই খারাপ অবস্থা হয়েছিল যে নিজের বাড়িটি পর্যন্ত বন্ধক রাখতে বাধ্য হন তিনি। কিন্তু মোটেও আটকে যাননি অমিতাভ, ‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’ দিয়ে বেশ ভালভাবেই নিজের আর্থিক অবস্থা ফিরিয়ে আনেন তিনি। তারপর নতুন অমিতাভের উত্থান সবাই দেখেছেন, এখনো দেখছেন। ব্যাবসাসফল ছবি উপহার দিয়ে নতুন আঙ্গিকে বাড়িয়ে নিয়েছেন নিজের জনপ্রিয়তা।
৫. গোবিন্দ : বলিউডের কমেডি ধাচের ছবির মাধ্যমে জনপ্রিয় হওয়া এই নায়ক মাঝখানে এমন অবস্থায় পড়েছিলেন যে অটোরিকশায় চড়ার টাকাও ছিল না তার কাছে! সালমান খান এগিয়ে এসে দাঁড়িয়েছিলেন তখন তার পাশে। দুজনের একান্ত প্রচেষ্টা এবং সহায়তায় দুজনে মিলে করেন ‘পার্টনার’। আর ছবিটির দারুণ সাফল্য গোবিন্দকে উদ্ধার করে এই দুর্দশা থেকে। ছবিটিতে দারুন অভিনয়ের জন্য গোবিন্দ জিতে নেয় একটি অ্যাওয়ার্ডও।