নিজের কাঁধে রাজ্জাকের খাটিয়া বহন করলেন শাকিব খান

799

আজ ২৩ শে আগস্ট, বুধবার সকালে বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী নায়করাজ রাজ্জাককে বনানী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে। আর এসময় নায়ক রাজের মরদেহ নিজের কাঁধে তুলে নিতে দেখা গেলো দেশের সুপারস্টার অভিনেতা শাকিব খানকে!

নায়করাজ রাজ্জাকের মেজো ছেলে রওশন হোসেন বাপ্পি কানাডায় ছিলো। প্রথমে তাকে ছাড়াই মঙ্গলবারেই দাফন সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও বিশেষ বিবেচনায় ও রাজ পরিবারের সিদ্ধান্তে দাফন পেছানো হয়। আর নায়করাজের দাফন সম্পন্ন হলো বুধবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে। আর এসময় বনানী কবরস্থানে নায়করাজের মরদেহ নিজের কাধে তুলে নিতে দেখা গেছে তার তিন পুত্র ও তারকা অভিনেতা শাকিব খানকে।

রাজ্জাকের মেজো ছেলে বাপ্পি বুধবার ভোর চারটায় ঢাকায় অবতরণ করেন। আর তার আসার পর ফের কান্নার রোল পড়ে লক্ষ্মী কুঞ্জে। এসময় থেকেই এই পরিবারের সঙ্গে ছিলেন শাকিব খান। শুধু তাই না, বনানী কবরস্থানে যখন নায়করাজকে চিরনিদ্রায় শায়িত করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়, তখনও রাজ্জাকের তিনপুত্রের সঙ্গে মরদেহের খাটিয়াটি নিজের কাঁধে বহন করেন শাকিব।

এ এক অন্য শাকিব খান। কিছু দিন আগের শাকিবের সঙ্গে এই শাকিবের মিল নেই। নায়করাজের মৃত্যুতে শাকিব এতোটাই ভেঙে পড়েছেন যে, দেখলে চেনাই যায় না। রাজ্জাকের মৃত্যুর পর থেকে তার মরদেহের পাশে যেন ছায়ার মতো লেগে আছেন ঢালিউডের এই নাম্বার ওয়ান নায়ক। রাজ্জাকের মৃত্যুর খবর শুনে হাসপাতালে ছুটে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে বাচ্চাদের হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন এই অভিনেতা। কান্না জড়ানো কণ্ঠে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেন রাজ পরিবারের সদস্যদের। ছিলেন এফডিসির জানাজায়, গিয়েছিলেন শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে। শ্রদ্ধানত শির নিয়ে হাজির হয়ে গেলেন রাজ্জাকের দাফন কার্যে। কাঁধে তুলে নিলেন নায়করাজের খাটিয়া। অশ্রুসিক্ত চোখে শাকিব খান বিদায় দিলেন চলচ্চিত্রের কিংবদন্তীকে।

কাঁদো কাঁদো কন্ঠে শাকিব খান বলেছেন, ‘নায়করাজ রাজ্জাক সমগ্র বাঙালি জাতির সম্পদ। বাংলা চলচ্চিত্রে তার অবদান সবার ওপরে। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন। যাতে তিনি ওপারেও নায়করাজ হয়েই থাকেন’।

শাকিব আরও বলেন, ‘আমি তার সন্তানের মতো ছিলাম। সম্রাটের (নায়ক রাজের ছোট ছেলে খালিদ হোসাইন সম্রাট) কাছ থেকে তার মৃত্যুর খবর পেয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। সুঃখে হোক, দুঃখে হোক তার কাছে গিয়েছি। সবসময় তার প্রেরণাকে সামনে রেখে এগিয়ে গেছি। শেষবার তার সঙ্গে দেখা হয়েছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে। আমি তাকে সালাম করেছিলাম। কীভাবে সামনে এগিয়ে যাব সে বিষয়ে তিনি আমাকে অনেক পরামর্শ দিয়েছেন।

সবসময় তাকে পাশে পেয়েছি। তিনি কখনই কাউকে ফিরিয়ে দিতেন না। তার দরজা সবসময় সবার জন্য খোলা থাকতো। নায়করাজের পরে যত স্টার-সুপারস্টার-অভিনেতা-অভিনেত্রী আসবে, তার আদর্শকে সামনে নিয়েই এগোবে’।

নায়করাজ রাজ্জাকের মৃত্যুতে ব্যাথিত হয়ে যে শাকিব খান কতটা বদলে গিয়েছেন সেটা পরিষ্কার বোঝা যায়।