বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের উপর একটি চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অনেকদিন ধরে কথা হয়ে আসছে। তবে এ ছবির সম্ভাব্য পরিচালক হিসেবে বাংলাদেশের কাছে তিনজনের নাম প্রস্তাব করেছে ভারত। আর এই তিন পরিচালক হচ্ছেন ভারতের বরেণ্য পরিচালক শ্যাম বেনেগাল, গৌতম ঘোষ ও কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। তবে বাংলাদেশ এখনও তাদের মধ্যে থেকে কাউকে চূড়ান্ত করেনি। বাংলাদেশের তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা ঢাকায় ফিরে সরকারের শীর্ষপর্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করে পরিচালক নির্বাচন করবেন।
বঙ্গবন্ধুর উপর নির্মিত বায়োপিকের জন্য গত ১২ জুলাই সকালে দিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কাহিনিচিত্রটি ২০২০ সালের ১৭ মার্চ তার জন্মশতবার্ষিকীর ঠিক আগেই মুক্তি পাবে বলে জানা গেছে। এই ছবিটির কাজ শেষ করার জন্য হাতে সময় আছে দু’বছরেরও কম।
বঙ্গবন্ধুর বায়োপিকের জন্য ভারত যে তিন পরিচালকের নাম প্রস্তাব করেছে, তাদের মধ্যে অন্যতম শ্যাম বেনেগাল। বিপুল অভিজ্ঞতা, খ্যাতি ও আন্তর্জাতিক স্তরে কাজ করা লোকটির বয়স ৮৩ বছর। শ্যাম এর আগে পরিচালনা করেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোসের বায়োপিক জীবন নিয়ে ‘দ্য ফরগটেন হিরো’। এছাড়া তিনি নির্মাণ করেন ‘মন্থন’, ‘অঙ্কুর’, ‘নিশান্ত’-এর মতো বিখ্যাত ছবি।
এরপর আছেন গৌতম ঘোষ। পশ্চিমবঙ্গের অগ্রগণ্য পরিচালকদের মধ্যে একজন। তার বয়স ৬৭ বছর। তিনি ‘পদ্মানদীর মাঝি’র সময় থেকেই ভারত-বাংলাদেশের যৌথ প্রযোজনায় ছবি বানানোর অভিজ্ঞতা আছে। সম্প্রতি তিনি ‘শঙ্খচিল’ নামেও দুই দেশের যৌথ প্রযোজনায় আরেকটি ছবি বানিয়েছেন। সমালোচকদের প্রশংসাও কুড়িয়েছে এই ছবিটি।
সবশেষে আছেন এক তরুণ পরিচালক যার নাম কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। তার বয়স ৪৯ বছর বয়স। তিনি পশ্চিম বঙ্গ এবং বাংলাদেশে সমান জনপ্রিয়। গত বছর ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান “বিসর্জন” ছবির জন্য। ছবির গল্পটি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকা নিয়ে। নান্দনিক এই ছবিতে অভিনয় করেন বাংলাদেশের জয়া আহসান ও কলকাতার আবির চট্টোপাধ্যায়।
গত বছরের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক ও মুক্তিযুদ্ধের ওপর প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণের বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে সমঝোতাপত্র (মউ) স্বাক্ষর হয়েছিল। সেই অনুযায়ী নির্মাণ কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। এর প্রথম ধাপ পরিচালক নির্বাচন। পরিচালকের নাম চূড়ান্তের পরই শুরু হবে অভিনয়শিল্পী বাছাই। স্বাভাবিকভাবে সেদিকেও নজর থাকবে বাংলাদেশ ও ভারতের কোটি কোটি বাঙালির। জানা গেছে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ তার জন্মশতবার্ষিকীর আগে মুক্তি দেয়ার কথা থাকলেও ২০২১ সাল অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তীতে মুক্তি পাবে এই চলচ্চিত্রটি।