অভিনেতাঃ রণবীর কাপুর,পারেস রাওয়াল,দিয়া মির্জা,মনীষা কৈরালা,ভিকি কুসাল
পরিচালকঃ রাজকুমার হিরানী
মিউজিকঃ এ.আর.রহমান, রোহান-রোহান ও বিক্রম মন্ত্রজ
সময়সীমাঃ ২ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট
সাঞ্জু ছবির গল্পঃ “সাঞ্জু” সিনেমাটি সঞ্জয় দত্তের বাস্তব জীবনের সবচেয়ে ঘটনাবহুল সময় গুলোর সাথে আমাদের পরিচয় করিয়ে দেয়। সিনেমাটির প্রেক্ষাপট ১৯৯৩। ঐ সময় মুম্বাই শহরে একটি বোমা হামলা হয়। তিনি আর্মস সরবরাহ কেসে ফেঁসে যান। এছাড়া মাদকের বিসয়টিও তাঁর সাথে যুক্ত হয়। সিনেমাটিতে সঞ্জয় দত্তের বিচার ও নির্যাতনের এক নিন্দিত ঘটনাকে প্রকাশ করে।
“সাঞ্জু” সিনেমা রিভিউঃ “সঞ্জয় দত্ত” একজন বহুমাত্রিক চরিত্রের গল্প। এই গল্পের মধ্য দিয়ে রাজকুমার হিরানী এই প্রজন্মের কাছে একটি মানুষের নাটকীয় প্রবেশ-প্রস্থান দেখিয়েছেন। সিনেমাটিতে সঞ্জয় দত্তের চরিত্রে(রণবীর কাপুর) কে দেখা যায়। তিনি সুপ্রিম কোর্টে আত্মসমর্পণ করার আগে তাঁর আত্মজীবনী লেখার জন্য একজন লেখক খুঁজছিলেন। উইনি(আনুস্কা শর্মা) সাঞ্জুর আত্মজীবনী লেখার একজন লেখক চরিত্রে অভিনয় করেন। তিনি ঘটনাটি এভাবে প্রকাশ করেন যে, “জীবন রোলার কোস্টারের মত ঘুরছে যেখান উত্থান এবং পতন দুই আছে”। রাজকুমার হিরানী অনায়াসে সাঞ্জুর গল্পটি খুব চমৎকার ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। সিনেমাটিতে এমন একটি প্রাণ আছে যেখানে পিতা-পুত্রের সম্পর্ক ও একজন বন্ধুর গল্প উঠে আসে। কিন্তু নিজের জীবন ও বিবাহিত কোন গল্প এখানে নেই। সিনেমাটির গল্প খুব মর্মস্পর্শী। পিতার চরিত্রে অভিনয় করেছেন ( পারেস রাওয়াল) সুনীল দত্ত। সিনামাটিতে তাঁদের উপস্থাপন অনেক কষ্টের চিত্র তুলে ধরে।
সাঞ্জুর মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন (মনীষা কৈরালা) নার্গিস দত্ত। সিনেমাটিতে বাবা-মায়ের এমন কিছু দৃশ্য আছে যা আপনাকে কাঁদাবে।(ভিকি কুসাল) কমলেশ সবচেয়ে ভালো একজন বন্ধুর চরিত্রে দেখা যায় যা সিনেমাটির একটি অন্যতম শ্রেষ্ঠ চরিত্র। সিনেমাটিতে আরও অভিনয় করেছেন(দিয়া মির্জা) তাকে দেখা গেছে স্ত্রীর ভূমিকায়। সিনেমাটিতে তাঁদের প্রথম সন্তান ত্রিসালার উপস্থিতি নেই। সিনেমাটির প্রথম অধ্যায়ে তাঁর জীবনের সাথে যে সংগ্রাম করেছেন তাঁর চিত্র এবং দ্বিতীয় অধ্যায়ে তাঁর উপর করা মামলার চিত্রগুলো আমরা দেখতে পাই। যেখানে তিনি কোন সন্ত্রাসী নন। সেলুলয়েডের ফিতায় যেভাবে সাঞ্জু কে দেখানো হয় তখন মনে অনেক প্রশ্নের জন্ম হয়। হিরানী সিনেমাটিতে এমন কিছু দৃশ্য রেখেছেন তা দর্শকদের পর্দায় চোখ আটকে রাখতে বাধ্য করবে। তবে সিনেমাটিতে হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অনেক পুরনো মিউজিক ও এমন কিছু তথ্য দেখতে পাবেন তাতে দর্শকরা আরও অবাক হবেন।
সিনেমাটিতে রণবীর কাপুর আবারো নিজের অভিনয় দিয়ে নিজেকে প্রমাণ করলেন। বলার অপেক্ষা রাখেনা যে তিনি একজন অসাধারণ অভিনেতা যিনি নিজের ইচ্ছায় সঞ্জয় দত্তের ভূমিকায় নিজেকেই দেখিয়েছেন। এই প্রতিভাধর অভিনেতা চরিত্রের নানা দিক তুলে ধরেন। সিনেমাটির চরিত্র অনেক মুগ্ধ করে। ভিকি কুসালও রণবীরের সাথে একজন শক্তিমান অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন।
সিনেমাটির মিউজিক করেছেন (এ.আর.রহমান, রোহান-রোহান ও বিক্রম মন্ত্রজ)। কারহার ময়দান, ফতেহ এবং রুবিরুবি গানগুলো ছিল চমৎকার। তবে সিনেমাটিতে সাঞ্জুর ড্রাগ ব্যবহারের চিত্রটা অনেক কষ্ট দেয়। এমন কিছু পটভূমি দেখিয়েছেন পরিচালক তা বার বার কষ্ট দেবে দর্শকদের।
“সাঞ্জু” সিনেমাটি একটি মানুষের গল্পকে তুলে ধরে। তাঁর নির্মিত এ জীববিজ্ঞান এক কথায় অসাধারণ। হিরানী সাঞ্জুর জীবনের যে গল্প শোনায় তা দর্শকদের মাঝে সত্যি একটি স্থান করে নেয়। কিছু ভুল তো আছেই ! সেগুলো এড়িয়ে গেলেও “সাঞ্জু” নিঃসন্দেহে একটা দারুন আত্মজীবনী ।