শাহরুখ খানের ‘জাব হ্যারি মেট সেজাল’ ছবিটি দর্শক মহলে বেশি আলোচিত হয় নি। সবচেয়ে কম রিভিউ হয়েছে এই অভিনেতার জন্য যা দেখে অনেকে বলেছেন শাহরুখ খানের সুপারস্টার থাকার দিন শেষ। যা একজন অভিনেতার জন্য অনেক বড় দুর্বলতা। শাহরুখ খান ২০১৪ এর ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’ ছবির পর থেকে অনেক কঠিন সময় পার করছেন। ‘দিল ওয়ালে’, ‘ডিয়ার জিন্দেগি’, ‘রইস’ ছবি গুলো মোটামুটি হিট হলেও ‘ফ্যান’ ও ‘‘জাব হ্যারি মেট সেজাল’ ছবি গুলা একেবারেই দুর্যোগে আক্রান্ত।
অপরদিকে সালমান খানের ‘টিউবলাইট’ ছবিটিও ব্যাবসা সফল না হওয়ায় সালমান খান নিজে এর ক্ষতিপূরন দিবেন বলে জানা গিয়েছে।
কিন্তু কেন তাদের এ অবস্থা? যাদের পুরো ভারত এমন কি পুরো দুনিয়া ফলো করে। এর কারন হিসেবে কিছু ব্যাপার লক্ষ করা গিয়েছে। মোট ৫ টি বিষয়ে সতর্ক থেকে তারা তাদের এই দুর্যোগে আক্রান্ত পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন। সেই ৫ টি বিষয় হল-
১। কনটেন্টই সব কিছুর মূল : দুজনকেই ছবির গল্প নির্বাচনের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। আগে মুক্তি পাওয়া আমির খানের ‘দঙ্গল’ ও ‘বাহুবালি’ ছবিতে দর্শক মান সম্মত গল্পের ও নির্মাণ এর স্বাদ পেয়েছে। কারন সেখানে কনটেন্ট সম্পুর্ন নতুন ও ভিন্ন কিছু ছিল। আর ইদানিং এর মধ্যে মুক্তি পাওয়া ‘বাহুবালি ২’ প্রমান করে দিয়েছে যে দর্শক সবসময় অধিকতর ভাল কনটেন্ট ও মানসম্মত নির্মাণের ছবির পিছনেই ছুটবে।
শাহরুখ খানের ‘জাব হ্যারি মেট সেজাল’ এবং সালমান খানের ‘টিউবলাইট’ ছবি দুটির কনটেন্ট খুব একটা ভাল ছিল না। তাদের সেলফির পিছনে মিলিওন দর্শক থাকলেও ভাল কনটেন্টের ছবি না হলে সেই মিলিওন দর্শকের কেউই হলে গিয়ে ছবি দেখবে না।
২। সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষমতাকে দুর্বল ভাবা ঠিক না : রিভিউ ও প্রচারনার চেয়েও গুরুত্বপূর্ন জিনিস দর্শকের হাতের নাগালে। মিলিওন মিলিওন দর্শক বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যানে আজ নিজেদের মতামত দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। তাদের ছবি যদিল ভাল হয় তাহলে তাদের মিলিওন ভক্তরা সেটা খুব দ্রুত সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে দেবে। আর খারাপ হলে আরো দ্বিগুন গতিতে ছড়াবে। শাহরুখ খানের ‘জাব হ্যারি মেট সেজাল’ এবং সালমান খানের ‘টিউবলাইট’ ছবি দুটির গতানুগতিক মুক্তির ব্যাপারটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিবাচক আলোড়ন ফেলতে পারে নি। যা সিনেমা হলে দর্শক টানতে ব্যার্থ হয়েছে।
৩। সৃষ্টিশীল নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে নিজের ছবির উপর : সোজা কথায়, নিজের ছবির অতিরিক্ত প্রচারনা নেতিবাচক ও দৃষ্টিকটু। কোন ছবি্র যদি মাত্রাতিরিক্ত প্রচারনা চালানো হয় তাহলে সবারই ধারনা হয়র যায় যে ছবিটিতে কোন ঝামেলা আছে। এতে দর্শক হারানোর অনেক বড় একটি সম্ভাবনা রয়ে যায়। ভুল ঢাকতে বেশি বেশি প্রচারনার ব্যাপারটি এখন কারোরই অজানা নয়। অতিরিক্ত ব্যাবসা সফল ছবি ‘বাহুবালি’ ও ‘বাহুবালি ২’ এ প্রচারনার তেমন কিছু দেখা যায় নি।
৪। নিজেকে নতুন কিছুতে নিয়ে যেতে হবে কিন্তু নিজস্বতা হারিয়ে নয় : সালমান খান তার ‘টিউবলাইট’ ছবিতে নতুন কিছু করার চেষ্ঠা করলেও তার দর্শকরা তাকে সেভাবে পায় নি যেভাবে তারা আশা করেছিল। আবার শাহরুখ খান ও তার ‘জাব হ্যারি মেট সেজাল’ ছবিটিতে রোমান্সের নতুন কিছু করে দেখানোর চেষ্ঠা করলেও তার ছবির গল্প এ ক্ষেত্রে অনেক বড় বাধা দিয়েছে। তাদের দুজনেরই নতুন কিছু করার চেষ্ঠাটা ভাল থাকলেও এই দুজন সুপারস্টার দের তাদের বয়সের কাছাকাছি কোন ভুমিকাতে অভিনয় করলে আরো বেশি গ্রহনযোগ্যতা পেত।
৫। ভক্তদের উপর নির্ভর হলেই চলবে না : শাহরুখ খান ও সালমান খানের ভক্তরা তাদের ভালবাসে ও শ্রদ্ধা করে। তাদের পক্ষে লড়ার জন্য সবসময় আগ্রহী থাকে। তাই তাদের উচিৎ ভক্তদের এ আগ্রহ কে বাচিয়ে রাখা। তাদের ভক্তরা প্রায় ৩০০ টাকা খরচ করে সিনেমা হলে গিয়ে তাদের ছবি দেখবে। তাদের হতাশ করা যাবে না। ভাল কিছু না হলে ভক্তরাও এই ছবি দেখবে না। যে সময়ে আমাদের স্মার্টফোন আমাদের ব্রেনকে শাসন করে সেই সময়ে এ দুজন সুপারস্টারের এমন ক্ষমতা অর্জন করতে হবে যার ফলে তাদের ভক্তরা স্মার্টফোনের বাইরে গিয়ে তাদের ছবি দেখবে।
শাহরুখ খান ও সালমান খান তাদের দুর্বলতা গুলো বুঝে এই ৫ টি নিয়ম মেনে তাদের এ কঠিন সময় খুব দ্রুত কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে আশা করা যায়।