নায়করাজের আর খাওয়া হলো না ববিতার হাতের রান্না

434

বাংলার কিংবদন্তী নায়ক নায়করাজ রাজ্জাক ও ববিতা দুজনই কিংবদন্তি পরিচালক জহির রায়হানের হাত ধরে চলচ্চিত্রে এসেছেন। দুজনের মধ্যে সম্পর্কটা ছিল বন্ধুত্বের, ভাইবোনের মতো। তাই সম্পর্কটা পারিবারিকও। মাস খানেক দেখা না হলে একে অপরকে ফোন করে খবর নিতেন।

চলতি মাসের শুরুতেই রাজ্জাককে কল দিয়েছিলেন ববিতা। ববিতা বলেন, ‘আমি তাকে নিমন্ত্রণ করলাম। বললাম রাজ্জাক ভাই অনেকদিন দেখা হয় না। আমার বাসায়ও আপনি আসেন না অনেকদিন। ভাবীকে নিয়ে একবার আসেন। আপনাকে কিছু রান্না করে খাওয়াতে চাই। তিনি বললেন, থাইল্যান্ড যাবেন ঘুরতে। পরিবারের সবাইকে নিয়ে একটু বেড়াতে চাইছেন। সেখান থেকে এসে আমার বাসায় আসবেন।’

এরপর ববিতা আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলেন না। অঝোর ধারায় কাদতে কাদতে বললেন, ‘সে ভাগ্য আমি আর পেলাম কই। তাকে অনেকবারই রান্না করে খাইয়েছি। কিন্তু শেষবার যখন আবদার করলাম, কথা দিয়েও আসলেন না তিনি। আজ সন্ধ্যায় হঠাৎ খবর এলো না ফেরার দেশে চলে গেছেন তিনি। আমাদের অভিভাবক চলে গেলেন।’

ববিতা আরও বলেন, ‘আমার কাছে তিনি নায়ক ছিলেন না। তার সঙ্গে সম্পর্কটা পারিবারিক। তিনি আমার সেরা বন্ধু ছিলেন, ভাই ছিলেন। আমি তাকে বলি দার্শনিক। জীবনের প্রতি তার অগাধ মমতা ছিল। সময়কে তিনি কাজে লাগিয়েছেন সফলভাবে। তার অবদান এদেশের চলচ্চিত্র কোনোদিন ভুলতে পারবে না।’

ববিতা আরো বলেন যে, রাজ্জাকের সঙ্গে ৪০টি ছবিতে নায়িকা হয়ে অভিনয় করেছেন তিনি। রাজ্জাকের নিজের প্রযোজনা ও পরিচালনার ছবিতেও তিনি অভিনয় করেছেন।

রাজধানীর ইউনাইটেড হসপিটালে আজ সোমবার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যায় ইন্তেকাল করেন তিনি। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে চলচ্চিত্রপাড়ায়। তার মৃত্যুর খবর শুনে যে যার মত পাগল হয়ে ছুটে আসছেন ইউনাইটেড হসপিটালে। মাথার উপর থেকে অনেক বড় একটি ছায়া সরে গিয়েছে যা আর কখনোই আসবে না।