অভিনেতাঃ জিসু সেঙ্গুপ্তপ, সারা সেনগুপ্ত, অঞ্জন দত্ত, রুদ্রনীল ঘোষ
পরিচালকঃ সৃজিত মুখার্জি
ছবির ধরনঃ ফ্যামেলি ড্রামা
সময়সীমাঃ ২ ঘন্টা ২৯ মিনিট
আমাদের রেটিং: ৩/৫
কাহিনী সংক্ষেপঃ সিনেমার পর্দায় উমা এক প্রাণবন্ত কিশোরী যার প্রকৃত নাম (সারা সেনগুপ্ত)। জীবনের অন্তিম সময়ে সে লড়ে যাচ্ছে শুধু ইচ্ছে পূরণের আসায়। বাবা হিমাদ্রি সেন (জিসু সেনগুপ্ত) ও আছেন তাঁর মেয়ের সাথে। একসাথে থাকছেন সুইজারল্যান্ডে। তাদের কাছে কলকাতার দুর্গা পুজা টা ছিল একটি দীর্ঘায়ু স্বপ্ন। সিনেমাটিতে প্রধান অসঙ্গতি হচ্ছে তাঁর একমাত্র মেয়ের স্বপ্ন পূরণ করবার জন্য বাবার হাতে আছে অল্প কিছু মাস। এরপর ঐ শহরের অচেনা মুখগুলোকে নিয়ে এপ্রিল মাসে দুর্গাপূজার আয়োজন করেন। এমন অপরিমেয় মাঠে এক লড়াকু স্বপ্নের ভ্রমন টা ছিল হেরে যাবার জন্য নয়।
মুভি রিভিউঃ প্রকৃতির অপ্রতুল যে ভাষা এবং সে সাথে শ্রুতি নির্ভর সময়ের নান্দনিক সিনেমা “উমা”। সিনেমাটির ঘটনাটি সত্য,পৃথিবীর বুকে বেঁচে থাকা পাষণ্ড রোগের কথন আর দামি চরিত্রের চিত্রায়ন থাকছে দর্শকদের জন্য। জীবন পরিক্রমায় গল্পটি মুল গল্প থেকে সরে এলেও পর্দায় এক ইচ্ছে পূরণের মানুষ “উমার” জন্য ছিল একমাত্র সত্য। কারন, এই সিনেমাটিতে আছে সময়ের মোহ, চরিত্রাভিনেতাদের কৌশল,ধর্মীয় মূল্যবোধ,প্রেম-বিয়ে, একক আর ভেঙ্গে যাওয়া পরিবারদের গল্প যা দেখছে এই নির্মম পৃথিবী। দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টার সিনেমাটিতে ছিল রাম রাম জপ।
সিনেমার গল্পটি লেখক ইভান লেভারচেজের লেখা একটি সত্য ঘটনার উপর যেখানে একজন ক্যানাডিয়ান বালক বড়দিন উদযাপনে বিভোর থাকে। এই সিনামাটিতে সারা সেনগুপ্ত যে “উমা” চরিত্রে অভিনয় করেছে সেও একই অসুখে ভুগছে এবং এমনটাই ইচ্ছে সে কলকাতার দুর্গাপূজায় যেতে ছায়।সিনেমাটির প্রকৃত শব্দ এখানে স্বপ্ন পূরণ,একজন সত্যিকার জীবনের ধারক আর একজন পর্দার বাহক।
সিনামায় দুর্গাপূজার যে আনন্দ তা সম্পূর্ণ এপ্রিল মাসেও ছিল। দর্শকদের জন্য এক প্রকার মোহ হলেও এটা ছিল প্রধান কৌশল। নন্দিত চলচিত্র পরিচালক চরিত্রে অরক রায়, শব্দ এবং লাইট চরিত্রে ব্রাহ্মানান্দা চক্রবর্তী(অঞ্জন দত্ত), সুজন মুখারজি ভারুন ঘোষাল চরিত্রে যারা অভিনয় করেছেন তারা প্রত্যেকে উমার কাছে আক প্রকার প্রতিজ্ঞা বদ্ধ। একটি স্পর্শ কাতর গল্প যেখানে একজন বাবা তাঁর একমাত্র মৃত্যুমুখী মেয়ের জন্য সব ত্যাগ টুকু স্বীকার করে নেন সেখানে পরিচয় ঘটে মানবতার। উমার চেয়ে এখানে সম্পর্কই একটি নান্দনিক চিত্রায়ন। সিনেমাটিতে (মহিতোষ সুর) অনির্বাণ ভট্টাচার্য দুটি প্রধান চরিত্র।
আমরা বিরতির পর এমন একটি চরিত্র দেখতে পাই যখন ব্রাহ্মানান্দা এবং মহিতোষ হিন্দু ধর্ম নিয়ে কথা বলার সময় ব্রাহ্মানান্দা এমন ভাবে সিগারেটের ধোয়া ছাড়ছিলেন ঠিক সে সময় অমিতাভ বচ্চনের সরকার সিনেমায় তাঁর চা খাওয়ার দৃশ্যটি দৃশ্যটি ভেসে ওঠে।
পরিচালক এখানে কিছু দুরবদ্ধ দৃশ্য রেখেছেন। হিমাদ্রি সেনের সাথে উমার পরিচয় আরও হৃদয় গ্রাহী হতে পারতো। তারা দুজনই কথা বলে কলকাতার সংস্কৃতি আর পূজা নিয়ে। কিন্তু উমার মা আর ছেলে বন্ধু নিয়ে কথা হয় না।
জীবনের তাগিদ বোঝার জন্য এই সিনেমাটি দর্শকদের আকর্ষণ করবে। অঞ্জন দত্তের সাথে মনোজ মিত্রের হাসপাতালের সাক্ষাতটা ছিল বেশ মর্মস্পর্শী। যখন মিত্র ছেলের কণ্ঠে কথা বলে ঐ দৃশ্যটি সবাইকে নাড়া দেয়। সিনেমাটিতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে উমার উপস্থাপনা পর্দায় আরও কিছুক্ষণ থাকাটা আবশ্যক হতে পারতো।
সবশেষে বলতে পারি গল্পটির চরিত্র গুলো বোঝা বেশ কঠিন ছিল।