শাকিব খানের পাঠানো তালাক নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) অঞ্চল ৩ মহাখালী কার্যালয়ে তাঁদের শাকিব-অপু দুজনকেই থাকতে বলা হয়। কিন্তু শুটিংয়ে ব্যস্ততার কারণে মাসখানেকেরও বেশি সময় ধরে দেশের বাইরে থাকায় বৈঠকে দেখা যায়নি শাকিবকে। তবে অপু বিশ্বাস হাজির হন সাড়ে ১২টার দিকে এবং শুনানিতে অপু, শাকিব খানের সাথে সংসার করার পক্ষেই মত দেন।

সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে অপু বলেন, ‘আজ শুনানিতে গিয়ে জানতে পেরেছি শাকিব খান যে আবেদন করেছেন ডিভোর্সের জন্য সেটি বাতিলও হতে পারে। কারণ, ডিভোর্সের জন্য যেসব কাগজপত্রাদি জমা দেয়া দরকার সেগুলোর অনেক গুরুত্বপূণ কাগজ তিনি জমা দিতে পারেননি। রাগের মাথায় তিনি আমাকে ডিভোর্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দেশে প্রচলিত ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইনে ডিভোর্সের বেশ কিছু নিয়ম কানুন রয়েছে। সেইসব নিয়মে এই আবেদন শুদ্ধ নয়। শাকিবের আইনজীবীকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কেন জমা দেয়া হয়নি সেটি ফোনের মাধ্যমে জিজ্ঞেস করেছে সিটি করপোরেশন। তিনি কোনো সদুত্তর দেননি। যে আবেদনটি সঠিকই নয় তার ফলাফল নিয়ে আমি ভাবছি না। আমি সংসার করতে বরাবরই আগ্রহ প্রকাশ করেছি আজও করে এলাম।’

অপু আরো বলেন, ‘ছেলে আব্রামের জীবনটা অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যাবে আমরা আলাদা হলে। মা হিসেবে আমি এটা কখনোই চাই না। আমি শাকিবকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলাম, আজও সেই ভালোবাসা একচুল কমেনি। আরও দুটি শুনানি বাকি রয়েছে আমাদের। আমার বিশ্বাস শাকিব তার ভুল বুঝতে পারবে এবং স্ত্রী-পুত্রের কাছে ফিরে আসবে। এতে আমাদের দুজনের ইমেজও বাঁচবে, আমাদের ছেলেও আর দশটা ছেলের মতো স্বাভাবিক জীবন পাবে। বিচ্ছেদ কোনো সমাধান নয়, হতে পারে না।’- যোগ করলেন অপু বিশ্বাস।

শাকিব খান এই মুহূর্তে ব্যাংককে পরিচালক উত্তম আকাশের ‘চিটাগাইঙ্গা পোয়া নোয়াখাইল্যা মাইয়্যা’ ছবির শুটিংয়ে ব্যস্ত। এর আগে তিনি একই পরিচালকের ‘আমি নেতা হব’ ছবির কাজ করেছেন। তারও আগে লম্বা সময় ধরে শাকিব ছিলেন ভারতের হায়দরাবাদে ‘নোলক’ ছবির শুটিংয়ে। সেখান থেকে সরাসরি তাঁকে চলে যেতে হয় ব্যাংককে। ব্যাংককে দুটি ছবির গানের শুটিং শেষে আরেকটি নতুন ছবির কাজে তাঁর অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার কথা।

সংবাদ মাধ্যমে শাকিব বলেন, ‘এ মুহূর্তে দম নেওয়ার সময় পাচ্ছি না। গত বছর লম্বা সময় ধরে আমি সেভাবে কাজ করতে পারিনি। এতে প্রযোজক ও পরিচালকেরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সব ধরনের ঝামেলা কাটিয়ে গত বছরের শেষ দিকে আবার সিনেমার কাজে মনোযোগী হতে পেরেছি। অনেক কাজ জমে আছে। আর যেন প্রযোজক-পরিচালকেরা আমার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত না হন, তাই মন দিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।’

আর বিচ্ছেদের বিষয় নিয়ে শাকিব বললেন, ‘এ বিষয়ে যা বলার আইনজীবীর মাধ্যমে আগেই বলে দিয়েছি। নতুন করে বলার কিছুই নাই। আমার মাথায় কাজ ছাড়া এখন আর কিছুই নাই।’

শাকিবের উপস্থিত না থাকার বিষয়টি নিয়ে সিটি করপোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ‘এটা একান্তই তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। বৈঠকে আমাদের উদ্দেশ্য দুজনকে বোঝানো। কিন্তু যদি তাঁদের কেউ পূর্বের সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন, সে ক্ষেত্রে আমাদের পক্ষে কিছুই করা সম্ভব হবে না। আমরা আরও দুটি বৈঠকের সময় দিয়েছি। এর মধ্যে দ্বিতীয় বৈঠক হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি। তিনটি বৈঠকে যদি কোনো সমঝোতা না হয়, তাহলে তালাক কার্যকর হয়ে যাবে।