দেশের স্বনামধন্য প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আব্দুল আজিজ আর সিনেমা প্রযোজনা না করার ঘোষণা দিয়েছেন।
আব্দুল আজিজ বলেন, ‘জাজ সিনেমা বানাবে না এটা ফাইনাল এবং নতুন প্রজেকশন মেশিন বসাবে না। ২০১৮ সালের মধ্যে আমাদের অনেক হল কমে যাবে। তবে আমাদের নির্মাণাধীন সিনেমাগুলোর কাজ শেষ করব। এরপর আর নতুন কোনো সিনেমায় হাত দিব না।’
আব্দুল আজিজ আরো বলেন, ‘বর্তমানে চলচ্চিত্রে বিদ্যমান সমস্যার সমাধানের জন্য সরকারের সঠিক পলিসি প্রয়োজন।’ তবে কি কারণে তার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সিনেমা প্রযোজনা থেকে সরে যাচ্ছে সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে নারাজ তিনি।
২০১২ সালে যখন ঢাকাই চলচ্চিত্রের বেহাল দশা তখন আগমন ঘটে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার। একই বছর এই প্রতিষ্ঠান থেকে ‘ভালোবাসার রং’ নামে ডিজিটাল সিনেমা নির্মিত হয়। এরপর জিজিটাল প্রজেকশন বসিয়ে দেশের কিছু হল ডিজিটাল করে সিনেমা মুক্তি দেয়। বতর্মানে ২৮৩টি প্রেক্ষাগৃহে প্রজেকশন বসিয়েছে এবং ১৬টি প্রেক্ষাগৃহ কিনেছে এই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান।
এ পর্যন্ত জাজ মাল্টিমিডিয়া প্রযোজিত ৩০টি সিনেমা প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। এ ছাড়া ‘পাষাণ’, ‘পোড়ামন-টু’, ‘বেপরোয়া’সহ কয়েকটি সিনেমা নির্মাণাধীন রয়েছে।
জাজ মাল্টিমিডিয়া শুরুতে একক প্রযোজনায় সিনেমা নির্মাণ করলেও পরবর্তীতে ভারতের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনায় সিনেমা নির্মাণ শুরু করে। যৌথ প্রযোজনার সিনেমাগুলো ছিল সুপার হিট। দুই বাংলায় প্রশংসিতও হয়। অর্থাৎ শুধু আধুনিক প্রজেকশন বসিয়ে নয়, সিনেমা নির্মাণ করেও দর্শক মহলে প্রশংসা কুড়ায় এ প্রতিষ্ঠানটি। প্রশংসার পাশাপাশি সমালোচনাও রয়েছে।
জাজ মাল্টিমিডিয়া প্রযোজিত কিছু যৌথ প্রযোজনার সিনেমায় ভারতীয় শিল্পী ও কলাকুশলীদের নিয়ে নির্মাণ করা হয়। এসব চলচ্চিত্রে নামমাত্র কয়েকজন বাংলাদেশের শিল্পী ছিল। এতে সমালোচনার জন্ম দেয়। এরপর যৌথ প্রযোজনার সঠিক নিয়মনীতি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে চলচ্চিত্র পাড়ায়।
গত ঈদুল ফিতরে ‘বাদশা’ ও ‘নবাব’ নামে দুটি যৌথ প্রযোজনার সিনেমা মুক্তি না দেয়ার জন্য আন্দোলনে নামে চলচ্চিত্রের ১৮টি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত চলচ্চিত্র পরিবার। এ নিয়ে রাজপথে মিছিল, সেন্সর বোর্ডের সামনে অবস্থান ধর্মঘট, এমনকি সেন্সর বোর্ডের সদস্য ও হল মালিক সমিতির সভাতি নওশাদকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনাও ঘটে। এরপর চলচ্চিত্রাঙ্গন দুইভাগে বিভক্ত হয়। এরপরই সরকার যৌথ প্রযোজনার নতুন নীতিমালা করে। গঠন করা হয় নতুন প্রিভিউ কমিটি।
ঢাকাই চলচ্চিত্রে এখনো মন্দা বাজার চলছে। ২০১৮ সালের শুরুতে প্রথম দুই সপ্তাহ চলেছে দেশীয় সিনেমা। আর বাকি দুই সপ্তাহ চলেছে কলকাতার সিনেমা। ফেব্রুয়ারিতে এসেও নতুন কোনো সিনেমা প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়নি। ঠিক এমন সময় জাজ এই সিদ্ধান্ত নেয়।