রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষ বিদায় হল সুপ্রিয়া দেবীর

151
ছবিঃ সংগৃহীত

ভারতীয় বাংলা চলচ্চিত্র ও সিরিয়ালের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সুপ্রিয়া দেবী আর নেই। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষ বিদায় নিয়েছেন প্রখ্যাত অভিনেত্রী সুপ্রিয়া দেবী। গত শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) রাতে কলকাতার কেওড়াতলা মহাশ্মশানে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে।

ভোরে নিজ বাড়িতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। দীর্ঘদিন ধরে নানা রোগে ভুগছিলেন জনপ্রিয় ও গুণী এই শিল্পী।

মৃত্যুর পরই তার বাড়িতে ছুটে যান পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যুৎ মন্ত্রী শোভন দেব চট্টোপাধ্যায়সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী। বেলা সাড়ে তিনটায় কলকাতার বিশিষ্টজনদের শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য সুপ্রিয়া দেবীর মরদেহ রাখা হয় রবীন্দ্র সদনে। তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আসেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ টালিউডের বহু তারকা।

সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় তাঁর মরদেহ নিয়ে শোকযাত্রা শুরু হয়। শোকযাত্রা শেষ হয় কেওড়াতলা মহাশ্মশানে গিয়ে। শোকযাত্রায় ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, চিত্রতারকা প্রসেনজিৎসহ টালিউডের তারকা শিল্পী, রাজ্যের মন্ত্রী, কলকাতার মেয়রসহ বিশিষ্টজনেরা।

শোকযাত্রা শেষে সুপ্রিয়া দেবীর মরদেহ কেওড়াতলা মহাশ্মশানে তৈরি একটি সাদা বেদিতে। এরপর এখানে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সুপ্রিয়া দেবীকে গান স্যালুটের মাধ্যমে শেষ বিদায় জানানো হয়। রাষ্ট্রীয় সম্মানের পর তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় মহাশ্মশানের ভেতরে শেষকৃত্য সম্পন্নের জন্য।

সাত বছর বয়সে বাবার হাত ধরে সুপ্রিয়া দেবীর থিয়েটারে আত্মপ্রকাশ। প্রহ্লাদ দাসের কাছে নাচ শিখেছিলেন তিনি। এরপর একের পর এক কালজয়ী ছবি তিনি উপহার দেন। ঋত্বিক ঘটকের ‘মেঘে ঢাকা তারা’-র নীতা হোক কিংবা ‘দেবদাস’–এর চন্দ্রমুখী, কিংবা ‘দুই পুরুষ’-এর বিমলা কিংবা ‘বন পলাশীর পদাবলী’র পদ্মা, প্রত্যেকটি সিনেমায় তার উপস্থিতি যেন উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে বাঙালি দর্শকের কাছে।

উত্তম কুমার থেকে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, বাংলার তাবড় অভিনেতাদের সঙ্গে দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছেন তিনি। ২০০৬ সাল পর্যন্ত ৪৫টি ছবিতে তিনি অভিনয় করেন। পাশাপাশি কিছু ধারাবাহিকে দাপটের সঙ্গে তার অভিনয় জায়গা করে নিয়েছে বাঙালি দর্শকদের মনে।

দক্ষ অভিনয়, অনবদ্য কৌশল এবং তার মুন্সিয়ানার জন্য ভারতের ফিল্মফেয়ার, ২০১৪ সালে পদ্মশ্রী, ২০১১ সালে বঙ্গ বিভূষণসহ একাধিক সম্মানে ভূষিত হয়েছেন তিনি। ছাড়াও লাইফ-টাইম অ্যাচিভমেন্টসহ একাধিক পুরস্কার পান তিনি।

সুপ্রিয়া দেবী ১৯৩৫ সালে তৎকালীন বর্মায় জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৫৪ সালে বিশ্বনাথ চৌধুরীর সাথে বিবাহ সূত্রে আবদ্ধ হন সুপ্রিয়া দেবী। বেশ কয়েক বছর পর কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তিনি।

সুপ্রিয়া দেবীর মৃত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।