নায়করাজ রাজ্জাকের বড় ছেলে বাপ্পারাজ। সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতেই হাজির হয়েছিলেন তিনি নায়করাজের স্মরন সভায়। দায়িত্বটা তাঁরই বেশি। এফডিসি আজ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিবার আয়োজিত স্মরণসভায় বাপ্পারাজ কথা বলতে গিয়ে বেশ কবারই বাকরুদ্ধ হলেন ও আবেগে কাঁদলেন।
কখনো কখনো আবেগের সঙ্গে মিশে থাকল ক্ষোভও। নিজেও একসময় বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় নায়কদের একজন ছিলেন। সন্তান হিসেবে বাবা সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণা আর সমালোচনার উত্তর দিলেন বাপ্পারাজ।
উত্তরায় রাজলক্ষ্মী কমপ্লেক্স নিয়ে বেশ কিছু ভুল ধারনা প্রচলিত ছিল। প্রচলিত ভুল ধারণার কথার প্রসঙ্গে বাপ্পারাজ বলেন, ‘একটা ভুল ধারণা আছে যে, উনি সিনেমা হলের নাম করে মার্কেট করেছেন। অনুমতিটা সিনেমা হলের নাম করে নিয়েছেন। না, মার্কেটের কথা বলেই অনুমতি নেওয়া। মার্কেটটা ওখানে মার্কেট হিসেবেই তৈরি করা হয়েছিল। পরে আমরা সিনেমা হল করার চেষ্টা করেছিলাম, রাজউক থেকে অনুমতি দেওয়া হয়নি।’
সিনেমা হল না করার পেছনে মার্কেটটির নকশাও একটা বাধা ছিল বলে জানিয়ে বাপ্পারাজ বলেন, ‘ওই ভবনটায় অনেক পিলার ছিল। সেটা ভেঙে জায়গা বের করে সিনেমা হল করার কোনো উপায় ছিল না। করা হয়নি। পরে ওপরে সিনেমা হল করার চেষ্টা করেছিলাম, তখনো অনুমতি দেওয়া হয়নি। কিছুদিন আগেও ওখানে বিসিকের একটা অডিটোরিয়াম ছিল, ওটাও আমরা নেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম সিনেমা হল করার জন্য। উত্তরার একটি স্কুলের পাশে হওয়া সেটাও করা যায়নি। এই হলো ঘটনা।’
বাপ্পারাজ আরো বলেন, ‘এটা নিয়ে অনেকেরই ভুল ধারণা আছে, আমি পরিষ্কার করে দিলাম। রাজ্জাক সাহেব দুই নম্বরি করে মার্কেট বানাননি, রাজ্জাক সাহেব সৎ থেকে মার্কেট বানিয়েছেন। রাজ্জাক সাহেব যদি দুই নম্বরি করে বানাতেন, তাহলে উত্তরায় আরও চার-পাঁচটা মার্কেট থাকত। করেননি।’
সৎ থাকার কারণে তাদের অনেক সমস্যাও হয়েছে। এমনকি নিজেদের বাড়ির একটা অংশ বিক্রি করে দিতে হয়েছিল জানিয়ে বাপ্পারাজ বলেন, ‘আমাদের এত বড় একটা বাড়ি ছিল, ব্যবসায় ক্ষতি করার পরে ব্যাংকের মাত্র চার কোটি টাকা ঋণ ছিল। লাখ লাখ, কোটি কোটি টাকা মানুষ মেরে দেয়, আবুল-করিম-গফুররা এমন করে, কোনো কথা ওঠে না কখনো। কিন্তু রাজ্জাক সাহেবের নামে আসবে, রাজ্জাক সাহেব চার কোটি টাকা মেরে দিয়েছেন, ব্যাংকে ডিফল্টার।
আমরা আমাদের বাড়ি বিক্রি করে লোন শোধ করে দিয়েছি। আমরা অসৎ হলে মেরে দিতে পারতাম ওই টাকা। আরও বাড়ি করতে পারতাম, ডেভেলপার দিয়ে ফ্ল্যাট বানাতাম। এই ফ্ল্যাটগুলো কিন্তু আমাদের না, সেগুলো আমরা বিক্রি করে দিয়েছি। ওখানে আমাদের কোনো ফ্ল্যাট নেই।’
নায়করাজ সৎ থাকার জন্য যে তারা কত ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন বাপ্পারাজের কথায় তা পরিষ্কার ভাবে ফুটে ওঠে।